Subscribe:
Showing posts with label জ্ঞান-বিজ্ঞান. Show all posts
Showing posts with label জ্ঞান-বিজ্ঞান. Show all posts

অ্যান্ড্রয়েডের নতুন সংস্করণ ওরিও বিস্কুটের নামে


জেলি বিন, কিটক্যাট, ললিপপ বা মার্শমেলো—এসব নাম শুনে নিশ্চয়ই মিষ্টান্নের ছবি চোখের সামনে ভেসে ওঠে! তবে প্রযুক্তিপ্রেমীদের কাছে এগুলোর অন্য পরিচয়ও আছে। বিশেষ করে যাঁদের স্মার্টফোন গুগলের ‘অ্যান্ড্রয়েড’ অপারেটিং সিস্টেমে চলে, তাঁরা এই নামগুলো চেনেন অ্যান্ড্রয়েডের বিভিন্ন সংস্করণ হিসেবে। জনপ্রিয় বিভিন্ন মিষ্টান্নের নামে অ্যান্ড্রয়েডের বিভিন্ন সংস্করণের নামকরণের ধারা এবারও বজায় রেখেছে গুগল। সূর্যগ্রহণের দিনেই গত সোমবার এ বছরের বহুল প্রতিক্ষীত অ্যান্ড্রয়েডের নতুন সংস্করণ ৮.০ এর নামকরণ করা হয়, ‘ওরিও’। বিখ্যাত চকলেট প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান ক্যাডবেরির বিস্কুট ব্র্যান্ড ওরিওর নামেই অ্যান্ড্রয়েডের সর্বশেষ সংস্করণের নামকরণ করা হয়েছে।

গত মার্চে অ্যান্ড্রয়েড ‘ও’ নামে ডেভেলপার প্রিভিউ বা বেটা সংস্করণ উন্মুক্ত করেছিল গুগল। এরপর থেকে অনেকেই জল্পনাকল্পনা করছিল ‘ও’তে কী হবে এ নিয়ে। নামকরণের পরপরই উন্মোচন করা হয় এই অ্যান্ড্রয়েড সংস্করণ। শিগগিরই অ্যান্ড্রয়েডচালিত প্রায় সব স্মার্টফোনেই অ্যান্ড্রয়েড ওরিও হালনাগাদ করা যাবে। উন্মোচনের আগ পর্যন্ত মোট পাঁচবার বেটা সংস্করণকে উন্নতি করা হয়। এ মাসের শুরুতেই শেষ বেটা সংস্করণটি ছাড়া হয়।
ওরিওতে নতুনত্বের পাশাপাশি বেশ কিছু নতুন সুবিধাও যোগ করা হয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে আলোচিত সুবিধাটি হলো ছবি থেকে ছবি বা ‘পিকচার-ইন-পিকচার মোড’। ফোনের পর্দার ছোট অংশে যেকোনো ওয়েবসাইটের ভিডিও চালু রেখে স্মার্টফোনে অন্যান্য কাজ সেরে নেওয়ার সুবিধাই হচ্ছে পিকচার-ইন-পিকচার মোড। এমন সুবিধা অবশ্য স্যামসাংসহ বেশ কয়েকটি স্মার্টফোন এবং ইউটিউবে আগে থেকেই ছিল। এ ছাড়া থাকছে নোটিফিকেশনে নিজের পছন্দসই বিষয়বস্তু সাজিয়ে রাখা, থাকছে বিশেষ কপি-পেস্ট সুবিধা ‘স্মার্ট টেক্সট সিলেকশন’। এই সুবিধার মাধ্যমে ব্যবহারকারী কোনো কিছু কপি করার সময় পুরো ঠিকানা, টেলিফোন নম্বর বা ওয়েব ঠিকানা শনাক্ত করতে পারবে। ব্যাটারি ক্ষমতা দীর্ঘস্থায়ী করতে ‘স্মার্ট-অপটিমাইজেশন’ সুবিধা যোগ করা হয়েছে অ্যান্ড্রয়েডের নতুন সংস্করণে। রয়েছে নতুন নকশার ইমোজিও।

আপাতত যুক্তরাষ্ট্রের স্বল্প সংখ্যক অ্যান্ড্রয়েড ব্যবহারকারীর জন্য নতুন অ্যান্ড্রয়েড ওরিও উন্মুক্ত করা হয়েছে। পরবর্তী সময়ে গুগলের নিজস্ব স্মার্টফোন পিক্সেল ও নেক্সাস ফোনেই ওরিও ব্যবহার করা হবে বলে ধারণা করছেন অনেকেই। এ ছাড়া চুক্তি ভিত্তিতে অন্যান্য স্মার্টফোন নির্মাতারাও এটি ব্যবহারের সুযোগ পাবে বলে গুগলের একজন মুখপাত্র জানিয়েছেন। পরবর্তী প্রজন্মের স্মার্টফোনগুলোর জন্য অ্যান্ড্রয়েডকে আরও সহজতর করতেই গুগল এখন কাজ করছে বলেও জানান ওই মুখপাত্র।
সূত্র: বিবিসি

স্মার্টফোন বাজার কার দখলে?


বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিক, অর্থাৎ এপ্রিল থেকে জুন—এ তিন মাসে স্মার্টফোনের আন্তর্জাতিক বাজারে বড় ধরনের পরিবর্তন লক্ষ করা গেছে। এ সময় মোট ৩৬ কোটি ৬২ লাখ ইউনিট স্মার্টফোন বিক্রি হয়েছে, যা গত বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকের তুলনায় ৬ দশমিক ৭ শতাংশ বেশি। বাজার গবেষণা প্রতিষ্ঠান গার্টনার গতকাল মঙ্গলবার এ তথ্য জানিয়েছে।

বাজার দখলের হিসাবে অ্যান্ড্রয়েড অপারেটিং সিস্টেমচালিত ফোন বাজারে ৮৭ দশমিক ৭ শতাংশ আর আইওএসের দখলে ১২ দশমিক ১ শতাংশ।

গার্টনারের গবেষণা পরিচালক অংশুল গুপ্তা এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, দরকারি স্মার্টফোনের জোরালো চাহিদা থাকলেও উন্নয়নশীল বাজারগুলোয় ফোরজি স্মার্টফোন, যাতে বেশি স্টোরেজ, উন্নত প্রসেসর ও ক্যামেরা রয়েছে, তার চাহিদা বাড়ছে। ভারত, ইন্দোনেশিয়াসহ দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোয় গত বছরের তুলনায় স্মার্টফোন বিক্রি বেশি হচ্ছে।

গত বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকের তুলনায় এবার সব ধরনের স্মার্টফোন বিক্রি বেশি হয়েছে। গত বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকের তুলনায় এ বছর সাড়ে ৭ শতাংশ বেশি বিক্রি হয়েছে স্যামসাংয়ের ফোন। সে হিসাবে বাজারের শীর্ষে আছে দক্ষিণ কোরিয়ার প্রতিষ্ঠানটি। গত বছরে নোট ৭ নিয়ে দুর্দশার পর এবারে গ্যালাক্সি এস৮ ও এস৮ প্লাস বাজারে চাহিদা সৃষ্টি করেছে। অংশুল গুপ্তা বলেন, বাজারে হুয়াওয়ে, অপো ও ভিভোর মতো ব্র্যান্ডগুলো প্রতিযোগিতা শুরু করলেও আশা করা যায়, ২০১৭ সালে প্রবৃদ্ধি ধরে রাখবে স্যামসাং।


বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে ৩৩ লাখ ইউনিট আইফোন সরবরাহ করলেও গত বছরের তুলনায় এ বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে খুব বেশি এগোতে পারেনি অ্যাপল। স্মার্টফোন বাজারের দ্বিতীয় অবস্থান ধরে রেখেছে প্রতিষ্ঠানটি। গুপ্ত বলেন, উন্নয়নশীল দেশগুলোর বাজারে পুরোনো মডেলের আইফোনের প্রতি ক্রেতাদের আকর্ষণ থাকায় আইফোনের বিক্রি বাড়বে। নতুন আইওএস ১১ নতুন আইফোনের বিক্রি বছরের চতুর্থ প্রান্তিকে আরও বাড়িয়ে দেবে। এতে ২০১৭ সালে আইফোনের মোট বিক্রি বাড়বে।

৯ দশমিক ৮ শতাংশ বাজার দখল নিয়ে তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে চীনের স্মার্টফোন নির্মাতা হুয়াওয়ে। গত বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে ৮ দশমিক ৯ শতাংশ বাজার দখল ছিলে হুয়াওয়ের।

চীনের স্মার্টফোন ব্র্যান্ড ভিভো ও অপো ২০১৭ সালের দ্বিতীয় প্রান্তিকে সবচেয়ে ভালো পারফরম্যান্স দেখিয়েছে। গত বছরের তুলনায় এ বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে ৭০ দশমিক ৮ শতাংশ ভিভো ও ৪৪ দশমিক ১ শতাংশ বিক্রি বেড়েছে অপো স্মার্টফোনের। তথ্যসূত্র: আইএএনএস।

ফেসবুকের দংশন থেকে সাবধান!




কলেজে ফার্স্ট ইয়ারে পড়ে অয়ন। বছর দেড়েক পরই গুরুত্বপূর্ণ পাবলিক পরীক্ষা, যে পরীক্ষার ওপর নির্ভর করছে তার জীবনের মোড়। কিন্তু পাঠে মন নেই অয়নের।

অয়নের একটি মুঠোফোন আছে। গত জন্মদিনে অনেক কসরত করে মায়ের কাছ থেকে বাগিয়েছে। স্মার্টফোন! এটা ওর কাছে আলাদিনের চেরাগের চেয়েও দামি। আলাদিনের চেরাগে তো ঘষা লাগে, এটায় তা-ও লাগে না। মসৃণ পৃষ্ঠদেশে আলতো পরশ বোলালেই বিরাট জাদুর দুনিয়া খুলে যায়। এর নাম ফেসবুক। কলেজের টেক্সট বুক শিকেয় তুলে আপাতত এই ফেসবুক নিয়েই দিন কাটছে তার।

অয়নের শয়নে-স্বপনে এখন ফেসবুক। সকালে ঘুম থেকে উঠলেই বুকের ভেতর ফেসবুক মায়াপুরীর জাদুকাঠির মতো নাচে। ‘আয় আয়, সোনা জাদু’ বলে হাতছানি দেয়। এ ডাকে অয়ন পাগলপারা। সুযোগ খোঁজে কখন বড়দের নজর এড়িয়ে করতলে আনা যাবে সেই জাদুর যন্ত্র। দেওয়া যাবে স্ট্যাটাস, পোস্ট করা যাবে নিজেরই নায়কের মতো পোজ দেওয়া ছবি, আর পাওয়া যাবে লাইক। বন্ধু তালিকায় কয়েকজন মেয়েও আছে, যাদের সঙ্গে চ্যাট করার মজাই আলাদা! কিন্তু দুরবিনের মতো চোখ বিঁধিয়ে রাখা মুরব্বিদের জ্বালায় সে সুযোগ কি আর জোটে?

এ ভাবনায় অয়নের ধরণি উতলা। মা কী বলছেন, কানে যাচ্ছে না। আর বাবা তো এখন শত্রু। খালি পড়তে বলেন। ফেসবুকের ওপর কোনো ‘বুক’ আছে নাকি? আর স্কুলের শিক্ষকেরা কী যে ছাই বক বক করেন, কানে যেন পোকা মারার তরল বিষ ঢালেন! স্যাররা তো আর বোঝেন না—ফেসবুক পাঠে কী যে মজা!

এই করে করে অয়নের পরীক্ষা এসে যায়। মা ভাবেন, ঘাড় গুঁজে বসে থেকে ছেলে তাঁর ঘণ্টার পর ঘণ্টা যে বিদ্যার্জন করেছে, পরীক্ষার হলে গিয়ে উগরে দিলে খাতা সয়লাব। বাবা ভাবেন, না, ছেলে এবার বোমার মতো নাম ফাটাবে। কিন্তু বইয়ের তলে মুঠোফোন রেখে ছেলে যে ফেসবুক মকশো করে পাঠের ঝোলা উজাড় করেছে, এর খোঁজ তো তাঁরা পাননি। সোনার ছেলে অয়নের এই যদি পাঠের অবস্থা, তবে পরিণতি কী? এ প্রশ্নের উত্তর সবারই জানা।

এতক্ষণ যে অয়নের কথা বললাম, এটা কাল্পনিক চরিত্র। তবে ঘটনা কিন্তু অবাস্তব নয়। এমন অয়নের বিচরণ এখন চারদিকে। স্মার্টফোনে মোহাবিষ্ট এসব অয়ন ইন্টারনেটের মায়াজাল আর ফেসবুকের মতো সামাজিক যোগাযোগের প্যাঁচকলে আটকে শেষ হয়ে যাচ্ছে। শহর-বন্দর-গ্রাম—কোথাও এই আসক্তি কম নেই; বরং দিন দিন ব্যবহার বাড়ছে।

সম্প্রতি এক চক্ষু চিকিৎসকের চেম্বারে গিয়ে এমন একটি ছেলের দেখা মিলেছে। ছেলেটি সামনে এসএসসি দেবে। তার সমস্যা, পড়তে বসলে মাথা ঘোরায়, চোখে ঝাপসা দেখে। ক্ষুধামান্দ্য আছে। সকালে দেরিতে নাশতা করে। এতে উদ্বিগ্ন মা-বাবা। তাঁরা দুজনই ছেলেটিকে নিয়ে এসেছেন। চিকিৎসক চোখ পরীক্ষা করে কিছু না পেয়ে ছেলেটিকে উকিলের মতো জেরা শুরু করলেন। বেরিয়ে এল আসল ঘটনা। ছেলেটি রাত জেগে ইন্টারনেট ঘাঁটে। ফেসবুক নাড়াচাড়া করে। এতে তার প্রচুর প্রাণশক্তি খরচা হয়। অনেক রাত অবধি জেগে মায়ের তাগিদে ভোরে উঠতে হয় বলে দিনটা শুরুই হয় নিমতেতো আমেজে। মোটে একটা শরীর এত ধকল সইবে কেন? এ জন্য মাথা ঘোরানো আর চোখে ঝাপসা দেখার মতো উপসর্গের আবির্ভাব।

কিছু অভিভাবক আছেন, যাঁরা আগে থেকেই সচেতন। তাঁরা ছেলের হাতে স্মার্টফোন তুলে দেওয়ার বিপক্ষে। কিন্তু এ সিদ্ধান্তই-বা কতটুকু ঠিক? অত্যাধুনিক প্রযুক্তি যখন ঘরের ভেতর উপাদেয় খাবারের মতো সুঘ্রাণ ছড়াচ্ছে, এর স্বাদ নেওয়া থেকে ছেলে বা মেয়েকে কতক্ষণ বিরত রাখা যাবে? আবার সুযোগ দিলেও মরণ! এতে আসক্তি তৈরি হওয়ার ঝুঁকি ষোলো আনা। আর আধুনিক প্রযুক্তি থেকে নতুন প্রজন্মকে দূরে ঠেলে রাখাও তো সমীচীন নয়। তবে কি আমরা ফেসবুককে গলা ফাটিয়ে গাল দেব? ফেসবুকওয়ালের গোষ্ঠী উদ্ধার করব?

করেইবা কী লাভ? অনেক ক্ষেত্রে অগ্রপথিক তো বড়রাই। এমন পরিবারও আছে, যেখানে মা-বাবা উভয়েই ফেসবুক ছাড়া চলতে পারেন না। বাবা ঘুম থেকে উঠেই ফেসবুক খুলে দেখছেন দিনদুনিয়ার খবর। এর-ওর খোঁজ নিচ্ছেন। মা ফেসবুক খুলে ঘাঁটেন গৃহস্থালির নতুন গেজেট কী বেরোল, রান্নাবান্নার নতুন রেসিপি কী। মা-বাবার এই অবাধ তৎপরতায় তলে-তলে সন্তানও উৎসাহিত হয়।

এ কথা অস্বীকার করার জো নেই যে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবে ফেসবুক খুবই ভালো। এর মাধ্যমে নতুন নতুন যোগাযোগ বাড়ে। চেনা-অচেনা অনেকের সঙ্গে বন্ধুত্ব হয়। দুনিয়ার নানা প্রান্তের নানা খবর পাওয়া যায়। জানা যায় নতুন নতুন বিষয়। কিন্তু এর নেতিবাচক প্রভাবও তো কম নয়। বিশেষ করে কাঁচা মাথায় এর আসক্তি ভয়াবহ। সে ক্ষেত্রে কী করণীয়?

এ ক্ষেত্রে সচেতনতা, সতর্কতার বিকল্প নেই। সাপ এমন এক প্রাণী, একটা শিশু জ্ঞান হওয়ার পর থেকে জানতে পারে—বুকে হাঁটা এই প্রাণীর বিষ আছে। সাপের ছোবলে অন্য প্রাণী মারা যায়। কাজেই সাপ নিয়ে একজন মানুষ শৈশব থেকেই সচেতন। সাপ ভয়ংকর ঠিকই, তবে তার উপকারিতাও কম নয়। সাপ কৃষিজমির পোকামাকড়-ইঁদুর খেয়ে কৃষকের ফসল রক্ষায় বিরাট উপকার করে। সাপের বিষ ওষুধ তৈরিতে কাজে লাগে। কিছু মানুষের উপাদেয় খাবারের তালিকায় রয়েছে সাপ। বেদে বা সাপুড়ে সম্প্রদায়ের রুটিরুজির মূলেই তো সাপ। পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায়ও সাপের ভূমিকা কম নয়।

সে রকম ফেসবুকের ভালো জিনিসটা নিতে আমাদের তো কোনো সমস্যা নেই। উপকার আমরা যতটা পারি নেব। আর ক্ষতিকর দিক, যা বিষাক্ত দংশনের মতো সর্বনেশে, তা থেকে আমাদের অবশ্যই সতর্ক থাকতে হবে। সচেতন করতে হবে নতুন প্রজন্মকে। 

বারমুডা ট্রায়াঙ্গেলে কেন উধাও হয়ে যায় জাহাজ ও প্লেন? ফাঁস হল রহস্য


আটলান্টিক মহাসাগরে প্রায় ৫ লক্ষ বর্গ কিলোমিটার জায়গা জুড়ে বিস্তৃত বারমুডা ট্রায়াঙ্গেল পৃথিবীর সবচেয়ে রহস্যময় অঞ্চলগুলির একটি। বলা হয়, এখনও পর্যন্ত প্রায় ৭৫টি এরোপ্লেন এবং একশোর বেশি জাহাজ এই অঞ্চল পার হতে গিয়ে রহস্যময়ভাবে উধাও হয়ে গিয়েছে। সেই থেকে এই অঞ্চলকে কেন্দ্র করে নানা কল্পনা দানা বেঁধেছে। কেউ বলেছেন, ওই অঞ্চলে আসলে বাসা বেঁধে রয়েছে ভিনগ্রহের প্রাণীরা, কেউ আবার মনে করেছেন, আটলান্টিকের গভীরে রয়ে গিয়েছে কোনও লুপ্ত সাম্রাজ্য। বলা বাহুল্য, এই সমস্ত তত্ত্বের কোনওটিই খুব বিজ্ঞানসম্মত নয়। কিন্তু এবার খোদ বিজ্ঞানীরাই এই রহস্য ভেদ করার লক্ষ্যে এক নতুন তত্ত্ব দাঁড় করিয়েছেন।
একদল বিজ্ঞানী মনে করছেন, এই অঞ্চলে স্থায়ী হয়ে থাকা একটি ষড়ভুজাকার মেঘস্তরই জাহাজ ও এরোপ্লেন লোপাট হয়ে যাওয়ার নেপথ্যে ক্রিয়াশীল। বিজ্ঞানীদের দাবি, এই ষড়ভুজাকার মেঘস্তর ‘এয়ার বম্ব’ তৈরি করে। যার ফলে বারমুডা ট্রায়াঙ্গেলের আবহাওয়া সর্বদাই অত্যন্ত খারাপ হয়ে থাকে। আর এই খারাপ আবহাওয়ার শিকার হয়েই পথভ্রষ্ট হয়ে পড়ে জাহাজ ও এরোপ্লেন, এবং শেষমেষ ভেঙে পড়ে তলিয়ে যায় সমুদ্রের গর্ভে।
বিজ্ঞানীদলের অন্তর্গত আবহবিদ র‌্যান্ডি সারভেনি সংবাদমাধ্যমকে বিষয়টি ব্যাখ্যা করে বলেন, এই ধরনের এয়ার বম্ব আসলে মাইক্রোবার্স্ট নামের উপাদান নিয়ে গড়ে ওঠে। এর প্রভাবে মেঘ থেকে প্রবল বেগে নীচের দিকে হাওয়া নেমে আসে। এই হাওয়ার বেগ ১৭০ মাইল প্রতি ঘন্টার কাছাকাছি হতে পারে। এই তীব্র গতিসম্পন্ন হাওয়া নীচে নেমে এসে সমুদ্রপৃষ্ঠে ধাক্কা খেয়ে চতুর্দিকে ছিটকে পড়ে। এর ফলে তীব্র গতির হাওয়ার একটি আবর্ত তৈরি হয় বারমুডা ট্রায়াঙ্গেলে। এই আবর্তেরই শিকার হয় জাহাজ ও এরোপ্লেনগুলি। নাসার উপগ্রহ চিত্রে নাকি এই ছ’কোণা মেঘস্তরের ছবি ধরা পড়েছে বলে দাবি সারভেনির।
বারমুডা ট্রায়াঙ্গেলের রহস্যের বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা অবশ্য আগেও দিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। এই বছরের মার্চ মাসেই একদল বিজ্ঞানী দাবি করেছিলেন, বারমুডা ট্রায়াঙ্গেলে দেড়শো ফুট সমুদ্রগর্ভে নিহিত এবং প্রায় দেড় মাইল বিস্তৃত একটি আগ্নেয়গিরির জ্বালামুখ থেকে ক্রমাগত যে বিস্ফোরণ ঘটে তার প্রভাবেই এরোপ্লেন ও জাহাজ এই অঞ্চল পার হতে গিয়ে একেবারে ধ্বংসের সম্মুখীন হয়। এবারে সারভেনি ও তাঁর সঙ্গীরা অন্য রকম তত্ত্ব খাড়া করলেন। এই তত্ত্ব কতটা যৌক্তিক ভিত্তি পায়, সেটাই এখন দেখার।

হাতে আর একদিন! বিরল পূর্ণগ্রাস সূর্যগ্রহণের সাক্ষী থাকবে পৃথিবী


হাতে সময় আর মাত্র একদিন। আগামী ২১ আগস্ট এক বিরল সূর্যগ্রহণের সাক্ষী থাকবে উত্তর আমেরিকা। ৯৯ বছরে প্রথম এমন দৃশ্য দেখা যাবে। এটি হবে পূর্ণগ্রাস সূর্যগ্রহণ। এদিন চাঁদের ছায়া অতিক্রম করতে হবে পৃথিবীকে। এই দৃশ্য দেখার জন্য অবশ্যই আপনাকে চোখ বিশেষ চশমা পরতে হবে।
এই সূর্যগ্রহণের সময়, দেখা দেবে লুকোনো গ্রহ ৷ এক আধটা নয়, একসঙ্গে চারটি ৷ ২১ আগস্ট গ্রহণের ফলে চাঁদের ৭০ মাইল ছায়া পড়বে পৃথিবীতে ৷ আমেরিকা, বিশেষত উত্তর আমেরিকা থেকে পরিষ্কারভাবে দেখা যাবে এই গ্রহণ ৷ চাঁদ যখন সূর্যকে ঢাকবার চেষ্টায় থাকবে আর পাশ থেকে উঁকি দেবে সূর্য, তখন পৃথিবীবাসীরা সেই হালকা আলোয় দেখতে পাবে চারটি গ্রহকে ৷ সম্পূর্ণ খালি চোখে ৷ ভূগোল বইয়ে ছবি দেখার পর যে গ্রহগুলি দেখার জন্য ছোট ছেলেমেয়েরা সময় অসময়ে বাবা মায়ের কাছে বায়না ধরে, সেই গ্রহগুলি দর্শন দেবে আকাশে ৷ দেখা যাবে বৃহস্পতি, মঙ্গল, শুক্র ও বুধকে।
চাঁদ যেদিকে থাকবে, সেদিকেই দেখা দেবে বুধ ও শুক্র ৷ তার থেকে কিছু দূরে একই সরলরেখায় থাকবে বৃহস্পতি ৷ আকাশে ছড়িয়ে থাকা নক্ষত্রের সৌন্দর্যও সেদিন দেখা যাবে প্রাণভরে ৷ গ্রহণের সময় সূর্য স্থান নেবে লিও নক্ষত্রের মধ্যে।
এই গ্রহণের দৃশ্য দেখার জন্য নাসা সুরক্ষার কিছু মাপকাঠি স্থির করেছে। সেগুলি হল-
১) সরাসরি সূর্যের দিকে তাকাবেন না ৷ গ্রহণ দেখার জন্য বিশেষ ফিল্টার দেওয়া চশমা ব্যবহার করুন।
২) চশমা যেন ভালো পরিস্থিতিতে থাকে।
কোনো স্ক্র্যাচ যেন না থাকে ৷ চশমা যেন ভাঙা বা দোমড়ানো না হয়।
৩) ৩ বছরের পুরোনো চশমা হলে সেটি ব্যবহার করবেন না।
৪) চশমায় যেন অবশ্যই ISO মার্ক থাকে।
৫) ২ মিনিট ৪০ সেকেন্ডের বেশি সময় ধরে কোনোভাবেই গ্রহণ দেখবেন না। 
সূত্র: কলকাতা