Subscribe:

কোনটি খাবেন? গ্রিন টি নাকি রং চা?

ঘুম থেকে উঠেই কিংবা কাজের ফাঁকে একটু চা না হলে কি চলে? স্বাস্থ্যের কথা মাথায় রেখে আমরা অনেকেই দুধ চা এড়িয়ে যাই। কিন্তু রং চা (লিকার টি) এবং গ্রিন টির মধ্যো কোনটি বেশি ভালো হবে শরীরের জন্য এই ভাবনা থেকে মুক্তি দিতে দুই ধরনের চায়ের গুণাগুণের কথা বলেছেন বারডেম জেনারেল হাসপাতালের পুষ্টি কর্মকর্তা এবং বিভাগীয় প্রধান শামসুন্নার নাহিদ।



গ্রিন টি
ওজন কমানোর জন্য গ্রিন টির জুড়ি নেই। অ্যান্টি-অক্সিডেন্টসমৃদ্ধ হওয়ায় এটি ত্বকের জন্যও বেশ উপকারী। বেশি পরিমাণে গ্রিন টি পান করা ক্ষুধামন্দার কারণ হতে পারে। যাদের কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা আছে তাদের জন্যও গ্রিন টি কার্যকর।


রং চা
এটিও শরীরের জন্য ভালো। তবে গ্রিন টির তুলনায় কম কার্যকর। যেহেতু এতে অনেকেই চিনি মেশান, তাই ওজন কমানোর ক্ষেত্রে এর কার্যকারিতা কমে যায়। এটিও ত্বকের জন্য ভালো। তবে যাদের শরীরে পটাশিয়ামের পরিমাণ বেশি তাদের জন্য এই দুই ধরনের চা খাওয়াই মানা। স্বাস্থ্যকর চা পানের নিয়ম হলো দিনে ২ বার চা পান করা। অনেকের চা পান করলে ঘুমের সমস্যা হয়। সে ক্ষেত্রে ঘুমাতে যাওয়ার কমপক্ষে ৩ থেকে ৪ ঘণ্টা আগে চা পান করা উচিত, যাতে করে ঘুমের ব্যাঘাত না ঘটে।

বন্যার রোগবালাই


বন্যার সময় টিভি, পত্রিকা—সব জায়গাতেই চোখে পড়ছে দেশের বন্যাপীড়িত মানুষদের দুর্দশার ছবি। অসহায় শিশু ও নারীদের অমানবিক জীবনযাপন। পানিবাহিত বিভিন্ন সংক্রামক রোগসহ নানান কারণে বন্যাপীড়িত মানুষদের মাঝে দেখা দিচ্ছে মারাত্মক স্বাস্থ্যবিপর্যয়, বিশেষ করে শিশুরা রয়েছে চরম ঝুঁকিতে। অনেক জায়গায় বন্যার পানি কমতে শুরু করেছে। কিন্তু বন্যার পানি কমতে শুরু করার সঙ্গে সঙ্গেই বাড়তে শুরু করে রোগব্যাধি। ডায়রিয়া, নিউমোনিয়া, চর্মরোগসহ নানা ধরনের ব্যাধিতে এখন আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বেশি।

বন্যায় পানিবাহিত রোগ ও সচেতনতা
দেশের বিভিন্ন জায়গায় বন্যার কারণে পানি জমে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। এ কারণে ডায়রিয়া, কলেরা, টাইফয়েডসহ নানা রোগ সৃষ্টি হচ্ছে। পানি যখন নেমে যায়, তখন এসব রোগবালাই বেশি দেখা দেয়। এ সময় সুষ্ঠু পানিনিষ্কাশনব্যবস্থার অভাবে এ স্বাস্থ্যসমস্যা প্রকট আকার ধারণ করতে পারে। যখন পানি থাকে তখন পানিপ্রবাহের কারণে জীবাণুর আক্রমণ ঘটতে পারে না।
শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. গোবিন্দ চন্দ্র রায় বলেন, অনেকেই নদীর আশপাশে খোলা জায়গায় মলমূত্র ত্যাগ করে। মানুষের এ পয়োবর্জ্য এবং ওই এলাকার বিভিন্ন ময়লা-আবর্জনা মিলে জলাশয়ের পানি দূষিত হয়ে পড়ে। লোকজন তখন যদি এসব জলাশয়ের পানি বিশুদ্ধ না করে পান করে, খাবারের কাজে ব্যবহার কিংবা থালাবাসন ধোয়া, কাপড় কাচা ইত্যাদি কাজে ব্যবহার করে, তখন ডায়রিয়া বা পানিবাহিত রোগবালাই হতে পারে। দেশের সব জায়গায় পানিবাহিত রোগ একসঙ্গে ছড়ায় না। একই সঙ্গে সব মানুষ রোগে আক্রান্তও হয় না। ব্যক্তির রোগ প্রতিরোধক্ষমতা কতটুকু, তার শরীরে কতগুলো জীবাণু প্রবেশ করল এবং সে কী ধরনের পরিবেশে থাকে, রোগ হওয়ার হার—এসবের ওপর নির্ভর করে।
আমাদের শরীর যদি এ তিনটির ভারসাম্য রক্ষা করতে না পারে, তখন সে অসুস্থ হয়ে পড়ে। ডায়রিয়া মূলত পানিবাহিত রোগ। খাবারের মাধ্যমে এ জীবাণু শরীরে প্রবেশ করে। তবে বন্যা বা বন্যাকালীন মূলত দূষিত পানি পান আর অপরিচ্ছন্নতার কারণেই রোগবালাই বেশি হয়।

চিকিৎসা ও করণীয়
ডায়রিয়া হলে শরীর থেকে পানি ও লবণ বেরিয়ে যায়৷ লবণ ও পানির অভাব পূরণ করাই এর একমাত্র চিকিৎসা। শরীর থেকে যে পরিমাণ পানি বেরিয়ে যায়, তা যদি দ্রুত ফিরিয়ে আনা সম্ভব না হয়, মানুষ তখনই অসুস্থ হয়ে পড়ে এবং শরীরে লবণ-পানির ঘাটতি দেখা দিলে মৃত্যু হওয়ার আশঙ্কা থাকে। সময়মতো লবণ-পানি শরীরে ফিরিয়ে দেওয়া গেলে মৃত্যুভয় থাকে না। ডায়রিয়ায় আক্রান্ত রোগীকে খাওয়ার স্যালাইন, ভাতের মাড় বা অন্য বিশুদ্ধ পানীয় পান করালে শরীরে লবণ-পানির ঘাটতি কমবে। শিশুকে বুকের দুধ খাওয়ানো বন্ধ করবেন না। যে বয়সের জন্য যে খাবার স্বাভাবিক, তা–ই খাওয়াতে হবে। অবস্থার উন্নতি না হলে দ্রুত ডাক্তারের সঙ্গে যোগাযোগ করুন।
রোগীকে সব সময় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকতে হবে। বাসায় বা হাসপাতাল যেখানেই চিকিৎসা নেন, সে জায়গা নিয়মিত পরিষ্কার করতে হবে। খাবার সব সময় ঢেকে রাখতে হবে। মশা-মাছি কলেরা ও ডায়রিয়া রোগের জীবাণু ছড়ায়। খাবার ঢেকে রাখলে কলেরা ও ডায়রিয়া হওয়ার আশঙ্কা কম থাকে। পচা বা বাসি খাবার খাওয়া এবং বন্যার পানিতে মল ত্যাগ করা যে ক্ষতিকর, সে ব্যাপারে সবাইকে সচেতন করে তুলুন৷ প্রতিদিন খাবারের আগে ও পায়খানা থেকে ফেরার পর সাবান দিয়ে দুই হাত ভালো করে ধুতে হবে। সাবান না থাকলে ছাই, মাটি বা পানি দিয়ে হাত পরিষ্কার করতে হবে। ডায়রিয়া প্রতিরোধ করা খুবই সহজ। তাই সচেতন থাকলেই ডায়রিয়া বা এ ধরনের পানিবাহিত মারাত্মক রোগ এড়ানো সম্ভব।

যেভাবে নিজেকে প্রস্তুত রাখবেন
পানির কারণেই রোগ হয় বলে আগে থেকেই বিশুদ্ধ পানি সংগ্রহ করে রাখা উচিত। এতে দুর্যোগের সময় ও পরবর্তী সময়ে এই পানি ব্যবহার করা যাবে। পানি সংগ্রহ করা না গেলে পানি বিশুদ্ধ করার উপকরণ যেমন বিশুদ্ধকরণ বড়ি, পানি ফোটানোর জন্য জ্বালানি ইত্যাদি ব্যবস্থা করতে হবে। এ ছাড়া সাবান, পরিষ্কার পানির পাত্র ইত্যাদিও সংগ্রহ করতে হবে। এই সময়ে যেসব ওষুধ সঙ্গে রাখতে পারেন, প্যারাসিটামল, মেট্রোনিডাজল, টেট্রাসাইক্লিন, কৃমিনাশক বড়ি এবং বেনজাইল বেনজোয়েট মলম চর্মরোগের জন্য।

পানি বিশুদ্ধ করবেন যেভাবে
যেহেতু দূষিত পানি ও অপরিচ্ছন্নতার কারণে এ রোগ হয়, তাই কষ্ট করে হলেও বিশুদ্ধ পানি পান ও ব্যবহার করতে হবে। টিউবওয়েলের বিশুদ্ধ পানি পাওয়া না গেলে বিভিন্ন জলাশয়ের পানি পান ও ব্যবহার করা যেতে পারে। তবে জলাশয়ের পানি পান ও খাওয়ার কাজে ব্যবহার করতে চাইলে ফুটিয়ে পান করতে হবে। জলাশয়ের পানি ১০ মিনিট ফুটিয়ে কিছুক্ষণ রেখে দিলে এর বেশির ভাগ জীবাণু মরে যায়। পানি ফোটানোর পর ঠান্ডা করে কিছুক্ষণ রেখে দিলে দৃশ্যমান জীবাণু নিচের তলানিতে পড়ে যায়। তলানি ফেলে দিয়ে ওপরের পানি ব্যবহার করা যাবে। তবে প্রতিকূল পরিবেশ ও অন্যান্য কিছু কারণে সব জায়গার পানি ফোটানো সম্ভব হয় না। সেসব জায়গায় পানি বিশুদ্ধকরণ বড়ি ব্যবহার করা যেতে পারে।

এই সময়ে নানা চর্ম সমস্যা
বন্যার পানিতে গোসল কিংবা গায়ে লাগানো থেকে যতটুক পারুন বিরত থাকুন। কেননা এই পানি বিভিন্ন জীবাণুর ধারক ও বাহক। তাই এই পানির স্পর্শে বিভিন্ন চর্মরোগ হওয়ার আশঙ্কা বেশি। সব সময় পানির সংস্পর্শে থাকার জন্য হাতে–পায়ে স্যাঁতসেঁতে ও ভেজা আবহাওয়ার কারণে ত্বক বা ত্বকের খোসপাঁচড়া, ফাঙ্গাল ইনফেকশন, প্যারনাইকিয়া, স্ক্যাবিস জাতীয় নানা ধরনের ত্বকের অসুখ হয়ে থাকে৷
এ প্রসঙ্গে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চর্ম ও যৌন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মাসুদা খাতুন বলেন, এই সময়ে যে কটি চর্মরোগ সবচেয়ে বেশি দেখা যায়, তার মধ্যে ছত্রাকজনিত চর্মরোগ অন্যতম। এ সমস্যা এড়াতে হলে গায়ে ভেজা কাপড় রাখবেন না, হাত–পা ভালো করে ধুয়ে শুকনা কাপড়ে মুছে রাখবেন।
এ সময়ে ছত্রাকজনিত দাদ, ছুলি, ক্যানডিডিয়াসিস হতে পারে। এদের মধ্যে ছুলির কারণে ত্বকে দেখতে সাদা হয়। তাই অনেকেই আবার একে শ্বেতী ভাবতেও শুরু করেন। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে শ্বেতীর সঙ্গে এর কোনো সম্পর্ক নেই। তবে সাবধানতা অবলম্বন করলে এই সমস্যা থেকে সহজেই পরিত্রাণ পাওয়া যায়।

বন্যায় ডুবে যাওয়া টিউবওয়েলের পানি পুনরায় খাওয়ার আগে যা করবেন
যেসব টিউবওয়েল বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বা ডুবে গিয়েছিল, সেগুলোর পানি ডিসইনফেকশন না করে কোনো অবস্থাতেই পান করবেন না। নিজেরাই করতে পারেন এই কাজ। ১০০ গ্রাম ব্লিচিং পাউডারের সঙ্গে দেড় থেকে দুই লিটার পরিমাণ পানি একটি জগ বা পাত্রে ভালো করে মিশিয়ে মিশ্রণ তৈরি করুন। এরপর টিউবওয়েলের মূল অংশটি পাইপ থেকে খুলে পাইপের মধ্যে সেই মিশ্রণটি ঢেলে দিন। এবার ১৫-২০ মিনিট অপেক্ষা করুন। এরপর টিউবওয়েলের মূল অংশটি লাগিয়ে ১৫-২০ মিনিট, প্রয়োজনে আরও বেশি সময় ধরে হাতল চাপতে থাকুন। তাহলে সেই টিউবওয়েলের পানি পানের জন্য নিরাপদ হবে। মনে রাখবেন, কোনো ক্রমেই বন্যায় ডুবে গিয়েছিল এমন টিউবওয়েলের পানি ঠিকমতো শোধন না করে পান করবেন না। এতে পানিবাহিত রোগ হওয়ার আশঙ্কা অনেক বেশি।

সাপে কাটলে
বন্যায় বিষাক্ত পোকামাকড় যেমন সাপ, ব্যাঙ ইত্যাদি তাদের আবাস হারিয়ে উঁচু জায়গা খুঁজতে থাকে, আর ঢুকে পড়ে মানুষের আবাসস্থলে। তখনই ঘটে সাপে কামড়ানোর ঘটনা। তবে কার্বলিক অ্যাসিডের বোতলের ছিপি খুলে ঘরের কোণে রাখলে ঘরে সাপ ঢুকবে না। ঘরের চারপাশে পানি এলে বেড়া বা দেয়ালের ধার ঘেঁষে ওষুধ ছিটাতে হবে। এতে ব্যাঙ ও বিভিন্ন রকম বিষাক্ত পোকামাকড় ঘরে ঢুকতে পারবে না।
আর বিষধর সাপের কামড়ে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই মৃত্যুর মূল কারণ সচেতনতার অভাব। ওঝা বা বেদের মাধ্যমে অবৈজ্ঞানিক উপায়ে চিকিৎসা করা, রোগীকে হাসপাতালে আনতে দেরি করা এবং বিজ্ঞানসম্মত উপায়ে চিকিৎসা না করানোর ফলে অনেক প্রাণ অকালে ঝরে যায়।

যা করবেন
সাপে কাটলে আতঙ্কিত না হয়ে নিরাপদ স্থানে বসে থাকুন। আক্রান্ত অঙ্গ নাড়াচাড়া করবেন না। একটি লম্বা কাঠ ও কাপড়ের সাহায্যে আক্রান্ত স্থানটি বেঁধে ফেলুন। খুব বেশি শক্ত করে বাঁধবেন না, এতে রক্ত চলাচল বন্ধ হয়ে যেতে পারে। এমনভাবে বাঁধতে হবে, যেন আক্রান্ত অঙ্গ ও কাপড়ের মাঝে কষ্ট করে একটি আঙুল ঢোকানো যায়।
আক্রান্ত স্থানে প্রচণ্ড ব্যথা অনুভব করলে, রক্তক্ষরণ হলে, চোখের পাতা পড়ে গেলে, ঘাড় শক্ত রাখতে না পারলে, হাত-পা অবশ হয়ে এলে ও শ্বাসকষ্ট হলে একটুও দেরি না করে রোগীকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে।
সাধারণত নির্বিষ সাপের কামড়ে আক্রান্ত স্থানে সামান্য ব্যথা, ফুলে যাওয়া বা অল্প ক্ষত সৃষ্টি হয়ে থাকে। তবে এসব লক্ষণ থাকলেও ঝুঁকি নেওয়া ঠিক নয়, যেকোনো রোগীকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া উচিত। মনে রাখবেন, সাপ কামড়ানোর চিকিৎসা শুধু হাসপাতালেই করানো সম্ভব, অন্য কোথাও নয়।

যা করবেন না
* আক্রান্ত স্থান কাটা
* দড়ি দিয়ে খুব শক্ত করে বাঁধা
* আক্রান্ত স্থান থেকে মুখের সাহায্যে রক্ত বা বিষ টেনে বের করার চেষ্টা করা
* আক্রান্ত স্থানে গোবর, শিমের বিচি, আলকাতরা, ভেষজ ওষুধ বা কোনো প্রকার রাসায়নিক লাগানো
* অ্যান্টিহিস্টামিন ইনজেকশন প্রয়োগ করা
* কার্বলিক অ্যাসিড জাতীয় রাসায়নিক পদার্থ দিয়ে দংশিত জায়গা পোড়ানো
* গাছ–গাছড়ার রস দিয়ে প্রলেপ দেওয়া

ছত্রাক থেকে দূরে থাকা যায় কীভাবে
ত্বকে ফাঙ্গাস বেড়ে ওঠার পরিবেশ সৃষ্টি হলে সেখানে ফাঙ্গাস বেড়ে উঠতে চেষ্টা করবে। তাই ফাঙ্গাস প্রতিরোধে যেসব ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে সেগুলো হচ্ছে পা, আঙুলের ফাঁক, যৌনাঙ্গ ও এর পাশের ত্বক, নখের গোড়া ভালো করে সাবান দিয়ে পরিষ্কার করতে হবে। আর ত্বক পরিষ্কার বা ধোয়ার পর শুষ্ক টাওয়েল দিয়ে ভেজা স্থান মুছে শুষ্ক করে ফেলতে হবে। বিশেষ করে আঙুলের ফাঁক, ঊরুসন্ধির ভাঁজ, বগল, ঘাড়, মাথার চুল ইত্যাদি পুরোপুরি শুকনো না করলে সেখানে ফাঙ্গাস বেড়ে উঠতে পারে।

এই সময়ের সচেতনতা
জামাকাপড় ভিজে গেলে দ্রুত পাল্টে নিন। ভেজা কাপড় পরে থাকলে ছত্রাক সংক্রমণের আশঙ্কা বেশি।
নিয়মিত প্রয়োজনে দিনে দুবার গোসল করুন। জীবাণুনাশক সাবান ব্যবহার করতে পারেন। ঘামে বা বৃষ্টিতে বা বন্যার পানিতে ভিজলে ত্বক ধুয়ে শুকিয়ে নিন।
রাস্তায় বা বাড়ির আশপাশে এখন যত্রতত্র নোংরা পানি জমে আছে। পায়ের ত্বককে এই নোংরা পানি থেকে বাঁচিয়ে রাখুন। কেননা এই পানিতে রয়েছে হাজার রকমের জীবাণু।
বাড়িতে কারও ছত্রাক সংক্রমণ হয়ে থাকলে শিশুদের তার কাছ থেকে দূরে রাখুন।

স্ক্যাবিস বা খোসপাঁচড়া
এটি ত্বকের ছোঁয়াচে রোগ। যে কেউ যেকোনো সময় এ রোগে আক্রান্ত হতে পারে। তবে এই সময়ে অর্থাৎ বন্যাকালীন এর প্রাদুর্ভাব বেশি দেখা যায়। একজন আক্রান্ত হলে পুরো পরিবার এমনকি ঘনবসতিপূর্ণ ঘরে একত্রে বসবাস করলে তাদের মধ্যে যে কেউ এ রোগে আক্রান্ত হতে পারে। চুলকানি হলো প্রধান উপসর্গ আর রাতে সেই চুলকানি কয়েক গুণ বেড়ে যায়। এমনকি ক্ষতের সৃষ্টি হয়ে ঘা হতে পারে। অপরিচ্ছন্ন জীবনযাপন, এই রোগে আক্রান্ত রোগীর সঙ্গে একসঙ্গে বিছানায় শুইলে কিংবা ব্যবহার করা কাপড় অন্য কেউ ব্যবহার করলে খুব সহজেই এ রোগ ছড়াতে পারে। কারণ, জীবাণুটি ব্যবহৃত কাপড়ের মধ্যে দুই দিন পর্যন্ত বেঁচে থাকতে পারে। শিশু-কিশোরেরাই এ রোগে বেশি আক্রান্ত হয়ে থাকে।
অন্যান্য রোগও কম-বেশি হয়ে থাকে। তবে কিছু সাধারণ নিয়মকানুন যেমন পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা, নিয়মিত গোসল ইত্যাদি মেনে চললে এসব রোগ থেকে রেহাই পাওয়া যেতে পারে।
লেখক: চিকিৎসক

অ্যান্ড্রয়েডের নতুন সংস্করণ ওরিও বিস্কুটের নামে


জেলি বিন, কিটক্যাট, ললিপপ বা মার্শমেলো—এসব নাম শুনে নিশ্চয়ই মিষ্টান্নের ছবি চোখের সামনে ভেসে ওঠে! তবে প্রযুক্তিপ্রেমীদের কাছে এগুলোর অন্য পরিচয়ও আছে। বিশেষ করে যাঁদের স্মার্টফোন গুগলের ‘অ্যান্ড্রয়েড’ অপারেটিং সিস্টেমে চলে, তাঁরা এই নামগুলো চেনেন অ্যান্ড্রয়েডের বিভিন্ন সংস্করণ হিসেবে। জনপ্রিয় বিভিন্ন মিষ্টান্নের নামে অ্যান্ড্রয়েডের বিভিন্ন সংস্করণের নামকরণের ধারা এবারও বজায় রেখেছে গুগল। সূর্যগ্রহণের দিনেই গত সোমবার এ বছরের বহুল প্রতিক্ষীত অ্যান্ড্রয়েডের নতুন সংস্করণ ৮.০ এর নামকরণ করা হয়, ‘ওরিও’। বিখ্যাত চকলেট প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান ক্যাডবেরির বিস্কুট ব্র্যান্ড ওরিওর নামেই অ্যান্ড্রয়েডের সর্বশেষ সংস্করণের নামকরণ করা হয়েছে।

গত মার্চে অ্যান্ড্রয়েড ‘ও’ নামে ডেভেলপার প্রিভিউ বা বেটা সংস্করণ উন্মুক্ত করেছিল গুগল। এরপর থেকে অনেকেই জল্পনাকল্পনা করছিল ‘ও’তে কী হবে এ নিয়ে। নামকরণের পরপরই উন্মোচন করা হয় এই অ্যান্ড্রয়েড সংস্করণ। শিগগিরই অ্যান্ড্রয়েডচালিত প্রায় সব স্মার্টফোনেই অ্যান্ড্রয়েড ওরিও হালনাগাদ করা যাবে। উন্মোচনের আগ পর্যন্ত মোট পাঁচবার বেটা সংস্করণকে উন্নতি করা হয়। এ মাসের শুরুতেই শেষ বেটা সংস্করণটি ছাড়া হয়।
ওরিওতে নতুনত্বের পাশাপাশি বেশ কিছু নতুন সুবিধাও যোগ করা হয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে আলোচিত সুবিধাটি হলো ছবি থেকে ছবি বা ‘পিকচার-ইন-পিকচার মোড’। ফোনের পর্দার ছোট অংশে যেকোনো ওয়েবসাইটের ভিডিও চালু রেখে স্মার্টফোনে অন্যান্য কাজ সেরে নেওয়ার সুবিধাই হচ্ছে পিকচার-ইন-পিকচার মোড। এমন সুবিধা অবশ্য স্যামসাংসহ বেশ কয়েকটি স্মার্টফোন এবং ইউটিউবে আগে থেকেই ছিল। এ ছাড়া থাকছে নোটিফিকেশনে নিজের পছন্দসই বিষয়বস্তু সাজিয়ে রাখা, থাকছে বিশেষ কপি-পেস্ট সুবিধা ‘স্মার্ট টেক্সট সিলেকশন’। এই সুবিধার মাধ্যমে ব্যবহারকারী কোনো কিছু কপি করার সময় পুরো ঠিকানা, টেলিফোন নম্বর বা ওয়েব ঠিকানা শনাক্ত করতে পারবে। ব্যাটারি ক্ষমতা দীর্ঘস্থায়ী করতে ‘স্মার্ট-অপটিমাইজেশন’ সুবিধা যোগ করা হয়েছে অ্যান্ড্রয়েডের নতুন সংস্করণে। রয়েছে নতুন নকশার ইমোজিও।

আপাতত যুক্তরাষ্ট্রের স্বল্প সংখ্যক অ্যান্ড্রয়েড ব্যবহারকারীর জন্য নতুন অ্যান্ড্রয়েড ওরিও উন্মুক্ত করা হয়েছে। পরবর্তী সময়ে গুগলের নিজস্ব স্মার্টফোন পিক্সেল ও নেক্সাস ফোনেই ওরিও ব্যবহার করা হবে বলে ধারণা করছেন অনেকেই। এ ছাড়া চুক্তি ভিত্তিতে অন্যান্য স্মার্টফোন নির্মাতারাও এটি ব্যবহারের সুযোগ পাবে বলে গুগলের একজন মুখপাত্র জানিয়েছেন। পরবর্তী প্রজন্মের স্মার্টফোনগুলোর জন্য অ্যান্ড্রয়েডকে আরও সহজতর করতেই গুগল এখন কাজ করছে বলেও জানান ওই মুখপাত্র।
সূত্র: বিবিসি

স্মার্টফোন বাজার কার দখলে?


বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিক, অর্থাৎ এপ্রিল থেকে জুন—এ তিন মাসে স্মার্টফোনের আন্তর্জাতিক বাজারে বড় ধরনের পরিবর্তন লক্ষ করা গেছে। এ সময় মোট ৩৬ কোটি ৬২ লাখ ইউনিট স্মার্টফোন বিক্রি হয়েছে, যা গত বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকের তুলনায় ৬ দশমিক ৭ শতাংশ বেশি। বাজার গবেষণা প্রতিষ্ঠান গার্টনার গতকাল মঙ্গলবার এ তথ্য জানিয়েছে।

বাজার দখলের হিসাবে অ্যান্ড্রয়েড অপারেটিং সিস্টেমচালিত ফোন বাজারে ৮৭ দশমিক ৭ শতাংশ আর আইওএসের দখলে ১২ দশমিক ১ শতাংশ।

গার্টনারের গবেষণা পরিচালক অংশুল গুপ্তা এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, দরকারি স্মার্টফোনের জোরালো চাহিদা থাকলেও উন্নয়নশীল বাজারগুলোয় ফোরজি স্মার্টফোন, যাতে বেশি স্টোরেজ, উন্নত প্রসেসর ও ক্যামেরা রয়েছে, তার চাহিদা বাড়ছে। ভারত, ইন্দোনেশিয়াসহ দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোয় গত বছরের তুলনায় স্মার্টফোন বিক্রি বেশি হচ্ছে।

গত বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকের তুলনায় এবার সব ধরনের স্মার্টফোন বিক্রি বেশি হয়েছে। গত বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকের তুলনায় এ বছর সাড়ে ৭ শতাংশ বেশি বিক্রি হয়েছে স্যামসাংয়ের ফোন। সে হিসাবে বাজারের শীর্ষে আছে দক্ষিণ কোরিয়ার প্রতিষ্ঠানটি। গত বছরে নোট ৭ নিয়ে দুর্দশার পর এবারে গ্যালাক্সি এস৮ ও এস৮ প্লাস বাজারে চাহিদা সৃষ্টি করেছে। অংশুল গুপ্তা বলেন, বাজারে হুয়াওয়ে, অপো ও ভিভোর মতো ব্র্যান্ডগুলো প্রতিযোগিতা শুরু করলেও আশা করা যায়, ২০১৭ সালে প্রবৃদ্ধি ধরে রাখবে স্যামসাং।


বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে ৩৩ লাখ ইউনিট আইফোন সরবরাহ করলেও গত বছরের তুলনায় এ বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে খুব বেশি এগোতে পারেনি অ্যাপল। স্মার্টফোন বাজারের দ্বিতীয় অবস্থান ধরে রেখেছে প্রতিষ্ঠানটি। গুপ্ত বলেন, উন্নয়নশীল দেশগুলোর বাজারে পুরোনো মডেলের আইফোনের প্রতি ক্রেতাদের আকর্ষণ থাকায় আইফোনের বিক্রি বাড়বে। নতুন আইওএস ১১ নতুন আইফোনের বিক্রি বছরের চতুর্থ প্রান্তিকে আরও বাড়িয়ে দেবে। এতে ২০১৭ সালে আইফোনের মোট বিক্রি বাড়বে।

৯ দশমিক ৮ শতাংশ বাজার দখল নিয়ে তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে চীনের স্মার্টফোন নির্মাতা হুয়াওয়ে। গত বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে ৮ দশমিক ৯ শতাংশ বাজার দখল ছিলে হুয়াওয়ের।

চীনের স্মার্টফোন ব্র্যান্ড ভিভো ও অপো ২০১৭ সালের দ্বিতীয় প্রান্তিকে সবচেয়ে ভালো পারফরম্যান্স দেখিয়েছে। গত বছরের তুলনায় এ বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে ৭০ দশমিক ৮ শতাংশ ভিভো ও ৪৪ দশমিক ১ শতাংশ বিক্রি বেড়েছে অপো স্মার্টফোনের। তথ্যসূত্র: আইএএনএস।

ফেসবুকের দংশন থেকে সাবধান!




কলেজে ফার্স্ট ইয়ারে পড়ে অয়ন। বছর দেড়েক পরই গুরুত্বপূর্ণ পাবলিক পরীক্ষা, যে পরীক্ষার ওপর নির্ভর করছে তার জীবনের মোড়। কিন্তু পাঠে মন নেই অয়নের।

অয়নের একটি মুঠোফোন আছে। গত জন্মদিনে অনেক কসরত করে মায়ের কাছ থেকে বাগিয়েছে। স্মার্টফোন! এটা ওর কাছে আলাদিনের চেরাগের চেয়েও দামি। আলাদিনের চেরাগে তো ঘষা লাগে, এটায় তা-ও লাগে না। মসৃণ পৃষ্ঠদেশে আলতো পরশ বোলালেই বিরাট জাদুর দুনিয়া খুলে যায়। এর নাম ফেসবুক। কলেজের টেক্সট বুক শিকেয় তুলে আপাতত এই ফেসবুক নিয়েই দিন কাটছে তার।

অয়নের শয়নে-স্বপনে এখন ফেসবুক। সকালে ঘুম থেকে উঠলেই বুকের ভেতর ফেসবুক মায়াপুরীর জাদুকাঠির মতো নাচে। ‘আয় আয়, সোনা জাদু’ বলে হাতছানি দেয়। এ ডাকে অয়ন পাগলপারা। সুযোগ খোঁজে কখন বড়দের নজর এড়িয়ে করতলে আনা যাবে সেই জাদুর যন্ত্র। দেওয়া যাবে স্ট্যাটাস, পোস্ট করা যাবে নিজেরই নায়কের মতো পোজ দেওয়া ছবি, আর পাওয়া যাবে লাইক। বন্ধু তালিকায় কয়েকজন মেয়েও আছে, যাদের সঙ্গে চ্যাট করার মজাই আলাদা! কিন্তু দুরবিনের মতো চোখ বিঁধিয়ে রাখা মুরব্বিদের জ্বালায় সে সুযোগ কি আর জোটে?

এ ভাবনায় অয়নের ধরণি উতলা। মা কী বলছেন, কানে যাচ্ছে না। আর বাবা তো এখন শত্রু। খালি পড়তে বলেন। ফেসবুকের ওপর কোনো ‘বুক’ আছে নাকি? আর স্কুলের শিক্ষকেরা কী যে ছাই বক বক করেন, কানে যেন পোকা মারার তরল বিষ ঢালেন! স্যাররা তো আর বোঝেন না—ফেসবুক পাঠে কী যে মজা!

এই করে করে অয়নের পরীক্ষা এসে যায়। মা ভাবেন, ঘাড় গুঁজে বসে থেকে ছেলে তাঁর ঘণ্টার পর ঘণ্টা যে বিদ্যার্জন করেছে, পরীক্ষার হলে গিয়ে উগরে দিলে খাতা সয়লাব। বাবা ভাবেন, না, ছেলে এবার বোমার মতো নাম ফাটাবে। কিন্তু বইয়ের তলে মুঠোফোন রেখে ছেলে যে ফেসবুক মকশো করে পাঠের ঝোলা উজাড় করেছে, এর খোঁজ তো তাঁরা পাননি। সোনার ছেলে অয়নের এই যদি পাঠের অবস্থা, তবে পরিণতি কী? এ প্রশ্নের উত্তর সবারই জানা।

এতক্ষণ যে অয়নের কথা বললাম, এটা কাল্পনিক চরিত্র। তবে ঘটনা কিন্তু অবাস্তব নয়। এমন অয়নের বিচরণ এখন চারদিকে। স্মার্টফোনে মোহাবিষ্ট এসব অয়ন ইন্টারনেটের মায়াজাল আর ফেসবুকের মতো সামাজিক যোগাযোগের প্যাঁচকলে আটকে শেষ হয়ে যাচ্ছে। শহর-বন্দর-গ্রাম—কোথাও এই আসক্তি কম নেই; বরং দিন দিন ব্যবহার বাড়ছে।

সম্প্রতি এক চক্ষু চিকিৎসকের চেম্বারে গিয়ে এমন একটি ছেলের দেখা মিলেছে। ছেলেটি সামনে এসএসসি দেবে। তার সমস্যা, পড়তে বসলে মাথা ঘোরায়, চোখে ঝাপসা দেখে। ক্ষুধামান্দ্য আছে। সকালে দেরিতে নাশতা করে। এতে উদ্বিগ্ন মা-বাবা। তাঁরা দুজনই ছেলেটিকে নিয়ে এসেছেন। চিকিৎসক চোখ পরীক্ষা করে কিছু না পেয়ে ছেলেটিকে উকিলের মতো জেরা শুরু করলেন। বেরিয়ে এল আসল ঘটনা। ছেলেটি রাত জেগে ইন্টারনেট ঘাঁটে। ফেসবুক নাড়াচাড়া করে। এতে তার প্রচুর প্রাণশক্তি খরচা হয়। অনেক রাত অবধি জেগে মায়ের তাগিদে ভোরে উঠতে হয় বলে দিনটা শুরুই হয় নিমতেতো আমেজে। মোটে একটা শরীর এত ধকল সইবে কেন? এ জন্য মাথা ঘোরানো আর চোখে ঝাপসা দেখার মতো উপসর্গের আবির্ভাব।

কিছু অভিভাবক আছেন, যাঁরা আগে থেকেই সচেতন। তাঁরা ছেলের হাতে স্মার্টফোন তুলে দেওয়ার বিপক্ষে। কিন্তু এ সিদ্ধান্তই-বা কতটুকু ঠিক? অত্যাধুনিক প্রযুক্তি যখন ঘরের ভেতর উপাদেয় খাবারের মতো সুঘ্রাণ ছড়াচ্ছে, এর স্বাদ নেওয়া থেকে ছেলে বা মেয়েকে কতক্ষণ বিরত রাখা যাবে? আবার সুযোগ দিলেও মরণ! এতে আসক্তি তৈরি হওয়ার ঝুঁকি ষোলো আনা। আর আধুনিক প্রযুক্তি থেকে নতুন প্রজন্মকে দূরে ঠেলে রাখাও তো সমীচীন নয়। তবে কি আমরা ফেসবুককে গলা ফাটিয়ে গাল দেব? ফেসবুকওয়ালের গোষ্ঠী উদ্ধার করব?

করেইবা কী লাভ? অনেক ক্ষেত্রে অগ্রপথিক তো বড়রাই। এমন পরিবারও আছে, যেখানে মা-বাবা উভয়েই ফেসবুক ছাড়া চলতে পারেন না। বাবা ঘুম থেকে উঠেই ফেসবুক খুলে দেখছেন দিনদুনিয়ার খবর। এর-ওর খোঁজ নিচ্ছেন। মা ফেসবুক খুলে ঘাঁটেন গৃহস্থালির নতুন গেজেট কী বেরোল, রান্নাবান্নার নতুন রেসিপি কী। মা-বাবার এই অবাধ তৎপরতায় তলে-তলে সন্তানও উৎসাহিত হয়।

এ কথা অস্বীকার করার জো নেই যে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবে ফেসবুক খুবই ভালো। এর মাধ্যমে নতুন নতুন যোগাযোগ বাড়ে। চেনা-অচেনা অনেকের সঙ্গে বন্ধুত্ব হয়। দুনিয়ার নানা প্রান্তের নানা খবর পাওয়া যায়। জানা যায় নতুন নতুন বিষয়। কিন্তু এর নেতিবাচক প্রভাবও তো কম নয়। বিশেষ করে কাঁচা মাথায় এর আসক্তি ভয়াবহ। সে ক্ষেত্রে কী করণীয়?

এ ক্ষেত্রে সচেতনতা, সতর্কতার বিকল্প নেই। সাপ এমন এক প্রাণী, একটা শিশু জ্ঞান হওয়ার পর থেকে জানতে পারে—বুকে হাঁটা এই প্রাণীর বিষ আছে। সাপের ছোবলে অন্য প্রাণী মারা যায়। কাজেই সাপ নিয়ে একজন মানুষ শৈশব থেকেই সচেতন। সাপ ভয়ংকর ঠিকই, তবে তার উপকারিতাও কম নয়। সাপ কৃষিজমির পোকামাকড়-ইঁদুর খেয়ে কৃষকের ফসল রক্ষায় বিরাট উপকার করে। সাপের বিষ ওষুধ তৈরিতে কাজে লাগে। কিছু মানুষের উপাদেয় খাবারের তালিকায় রয়েছে সাপ। বেদে বা সাপুড়ে সম্প্রদায়ের রুটিরুজির মূলেই তো সাপ। পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায়ও সাপের ভূমিকা কম নয়।

সে রকম ফেসবুকের ভালো জিনিসটা নিতে আমাদের তো কোনো সমস্যা নেই। উপকার আমরা যতটা পারি নেব। আর ক্ষতিকর দিক, যা বিষাক্ত দংশনের মতো সর্বনেশে, তা থেকে আমাদের অবশ্যই সতর্ক থাকতে হবে। সচেতন করতে হবে নতুন প্রজন্মকে।